প্রায় এক সপ্তাহ মিসরের সুয়েজ খাল আটকে রাখা চার শ’ মিটার দীর্ঘ এভার গিভেন জাহাজ আংশিকভাবে মুক্ত হয়েছে। সোমবার সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসামা রাবি এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জাহাজটির অবস্থান সঠিক নির্দেশনায় ৮০ ভাগ সরিয়ে আনা হয়েছে। জাহাজের পেছনের দিক… তীর থেকে ১০২ মিটার (৩৩৫ ফুট) দূরে সরিয়ে আনা হয়েছে।’
মিসরের লেথ এজেন্সি জানায়, পূর্ণিমার জোয়ারে ১০টি টাগবোট জাহাজটিকে তুলে সঠিক অবস্থানে নিয়ে আসার কাজ করে।
এর আগে মঙ্গলবার সুয়েজ খালের যাতায়াত পথ বন্ধ করে দিয়ে আটকে পড়ে ২০ হাজার টন ওজনের এই জাহাজ। ১৯৩ কিলোমিটার (১২০ মাইল) দীর্ঘ সংকীর্ণ এই খালের দক্ষিণ প্রবেশপথ সুয়েজ বন্দর থেকে ছয় কিলোমিটার (তিন দশমিক সাত মাইল) উত্তরে জাহাজটি আটকে পড়ায় সমুদ্রপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সংকট তৈরি হয়েছে।
ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক এই সংযোগ পথে মোট বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১২ ভাগ পণ্য সরবরাহ করা হয়।
সোমবার এক টুইট বার্তায় আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ইঞ্চকেপ শিপিং সার্ভিস জানায়, আটকে পড়া এভার গিভেন জাহাজটি সোমবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টায় সফলভাবে আবার ভাসা শুরু করেছে।
টুইট বার্তায় প্রতিষ্ঠানটি জানায়, জাহাজটি এখন নিরাপদ আছে। পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্যের ভিত্তিতে খবর জানানো হবে।
গত মঙ্গলবার জাহাজটি আটকে পড়ার পর ব্যাপক নৌজটের সৃষ্টি হয় সুয়েজ খালের চলাচল পথে। লেথ এজেন্সি জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ৩৬৭টি জাহাজ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই সংযোগের দুই প্রান্তে পারাপারের অপেক্ষা করছে।
সুয়েজ সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরকে সংযোগ করা এই খাল সহসা খোলার কোনো সম্ভবনা না থাকায় এর আগে এশিয়া-ইউরোপ যাতায়াত করা বাণিজ্যিক জাহাজগুলো ঘুরপথে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ আফ্রিকা মহাদেশের উত্তমাশা অন্তরীপ ধরে চলাচল শুরু করে।
জাহাজ চলাচল তথ্য ও সংবাদ সংস্থা লয়েড’স লিস্ট জানায়, প্রথম এভার গিভেনের একই মালিকানার জাহাজ এভার গ্রেট এই পথে যাত্রা করে। বিকল্প এই পথে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আরো ১২ দিন বেশি সময় লাগবে।